রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bangla

Table of Contents

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী

নামরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
জন্মতারিখ৭ ই মার্চ ১৮৬১ (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ)
জন্মস্থানকলকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি
বাবার নামমহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
মায়ের নামসারদাসুন্দরী দেবী
স্ত্রীয়ের নামমৃণালিনী
ডাক নামরবি
ছদ্মনামবানুসিংহ
উপাধি গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি
সন্তানরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাধুরীলতা দেবী, মীরা দেবী এবং রেণুকা দেবী  
ভাইবোনসত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বর্ণকুমারী দেবী, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর,  পূণ্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বীরেন্দ্রনাথ ঠাকুর, হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর,  সৌদামিনী ঠাকুর, বর্ণকুমারী ঠাকুর, শরৎকুমারী ঠাকুর, ভুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং ঠাকুরদাদা ঠাকুর
পেশাকবি, লেখক, প্রাবন্ধিক, সঙ্গীতজ্ঞ, নাট্যকার এবং চিত্রশিল্পী
উল্লেখযোগ্য কর্মগীতাঞ্জলী, আমার সোনার বাংলা, জন গণ মন,  গোরো, ঘরে-বাইরে, রবীন্দ্র রচনাবলী,  শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
মৃত্যু৭ ই আগস্ট ১৯৪১ ( ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ )
মৃত্যুস্থানকলকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে ছিলেন?

রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাঙালি কবি, নাট্যকার, গল্পকার, ছোট গল্পকার, চিত্রকার, অভিনেতা ও দার্শনিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিশ্বকবি, কবিগুরুসহ বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার পান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলেন সকল দেশের সকল কালের এবং সকল মানুষের তীর্থভূমি। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম

রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ৭ ই মার্চ ১৮৬১ (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) সালে কলকাতা জোড়াসাঁকোর এক অভিজাত ব্রাহ্মণ (ঠাকুর) পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা ও মাতা 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম হল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতার নাম সারদাসুন্দরী দেবী। তার মাতা ছিলেন একজন স্নেহময়ী মহিলা। রবিন্দ্রনাথের পিতামহের নাম ছিল প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। তিনি ছিলেন একজন বিত্তশালী জমিদার ও জনহিতৈষী। পরিবাবারের শিক্ষা-দীক্ষা, সাংস্কৃতিক চেতনা ও পিতার মত ধর্মবিশ্বাস কবি রবীন্দ্রনাথের মধ্যেও ধূর্ত হয়ে উঠেছিল। কবি রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার পিতা মাতার অষ্টম সন্তান।   

আরো পড়ুন- কাজী নজরুল ইসলাম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈশবকাল

শীশুকাল থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্যান্য সন্তানদের মত অভিজ্ঞ পরিচালক দ্বারা লালিত পালিত হয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন জ্যোষ্ঠ ভ্রাতা ও কয়েকজন গৃহশিক্ষকের কাছে তার প্রাথমিক শিক্ষালাভ শুরু হয়।  তিনি কিছুদিন বিভিন্ন স্কুলেও পড়েছেন কিন্তু স্কুলেও নিয়ম-কানুন ও আবহাওয়া তার পছন্দমত না হওয়ায় বাড়িতেই তার পড়ালেখার ব্যাবস্থা করা হয়। বাড়িতেই তার এত বিশ্ববিদ্যার দুয়ার সম্মুখে উন্মুক্ত হয়ে গেল। 

শৈশবে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, নর্ম্যাল স্কুল, ব্যাঙ্গল একাডেমি এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলে কিছুদিন পড়ালেখা করেছিলেন। কিন্তু পড়ালেখায় তার মনোযোগ না থাকায় বাড়িতেই তার জন্য পরালেখার ব্যাবস্থা করা হয়েছিল। ছোটবেলায় জোড়াসাঁকোর বাড়িতে অথবা বোলপুর ও পানিহাটির বাগানবাড়িতে ঘুরে বেড়াতে সবথেকে বেশি পছন্দ করতেন রবীন্দ্রনাথ। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাজীবন

১৮৭৩ সালে এগারো বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপনয়ন অনুষ্ঠিত হলে তিনি তার বাবার সাথে কয়েক মাসের জন্য দেশ ভ্রমনে বের হন। প্রথমে তারা শান্তিনিকেতনে আসেন এরপন তারা পাঞ্জাবের অমৃতসরে কিছুকাল কাটিয়ে শিখদের উপাসনা করার পদ্ধতি পরিদর্শন করেন। এরপর তাকে নিয়ে তার পিতা যান পাঞ্জাবেরই ডালহৌসী শৈলশহরের নিকট বক্রোটায়। এখানকার বক্রোটায় বসে পুত্র রবীন্দ্রনাথ তার পিতার কাছ থেকে নিয়মিত সংস্কৃত ব্যাকরণ, ইংরেজি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান ও ইতিহাসের পাঠ নিতে শুরু করেন। অল্প বয়সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবি প্রতিভার উন্মেষ হয়। কিশোরকাল থেকেই কাব্যচর্চায় মনোনিবেশ করেন। মাত্র তেরো বছর বয়সেই তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় ছাপা হয় তার প্রথম কবিতা। 

১৮৭৮ সালে তিনি পড়ালেখা করতে বিলেত (লন্ডন) যান। ব্যারিষ্টার হওয়ার অভিপ্রায় তাকে লন্ডন পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে অল্পসময় অবস্থানের পর পশ্চাত্য জীবনাচরন, সেখানকার সাহিত্য – সংস্কৃতির খবর ও পশ্চাত্য সঙ্গীতের সুরমূছনা নিয়ে তিনি ফিরে আসেন কোলকাতায়। তার বড়ভাই  জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রেরণায় এবার কবির প্রাণে এলো গানের জোয়ার। তিনি রচনা করলেন গীতিকাব্য বল্মিকী প্রতিভা।

আরো পড়ুন- পদ্মা সেতু অনুচ্ছেদ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যৌবনকাল

১৮৭৮ খ্রীষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম বই ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। তারপর একে একে প্রকাশিত হয় সন্ধ্যাসঙ্গীত, প্রভাত সঙ্গীত,কড়ি ও কোমলছবি ও গান, মনসী কাব্যসমূহ। তারপর বের হয় চিত্রা, চৈতালী, কল্পনা, কথা ও কাহিনী, কণিকা, খেয়া, নৈবেদ্য, গীতাঞ্জলি, গীতালি ইত্যাদি। 

শুধুমাত্র কাব্যই নয়, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ, গল্প, রসরচনা, সমালোচনা, রুপক নাটক, শিশুসাহিত্য, বিজ্ঞান, সমাজতত্ব, শিক্ষাতত্ব, স্কুলপাঠ, ভ্রমণকাহিনী, সঙ্গীত, সাহিত্য ও শিল্পের প্রায় সব ক্ষেত্রেই তার স্বচ্ছন্দ বিচরনের ফলে যোগফল হলো বাংলা সাহিত্যের বর্তমান চরম উৎকর্ষ সাধন ও উন্নতি। তিনি প্রায় দুই হাজারের মতো ছবি এঁকেছেন। লন্ডনের ইন্ডিয়া সোসাইটি থেকে ১৯১২ সালে গীতাঞ্জলির ইংরেকি অনুবাদ প্রকাশিত হয়। সাথে সাথে প্রাতীচ্যের বিদগ্ধ সমাজে সাড়া পড়ে যায়। আইরিশ কবি ডব্লিউ . বি . ইয়েস ইংরেজি গীতাঞ্জলির ভূমিকা লেখেন। 

১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরাজ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে জলিওয়ালাবাগে নিরস্ত্র ভারতীয়দের ব্রিটিশ সেনারা নির্মমভাবে হত্যা করলে তার প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি পরিত্যাগ করেন। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, জাপান, মালয়, পারস্য প্রভৃতি দেসে ভ্রমন করেন এবং এই দেশগুলতে অনেক বক্তিতা ও রচনা পাঠ করেন। পৃথিবীর প্রায় সকল ভাষাতেই তার রচনা প্রাকাশিত হয়েছে। বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মানুষ তাকে মনীষী হিসেবে শ্রদ্ধা করেন। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম জীবন

১৮৭৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ভারতী পত্রিকায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ রচনা প্রকাশ কর হয়। সেগুল ছিল ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী, মেঘনাদবধ কাব্যের সমালোচনা আর ভিখারিনী ও করুণা নামে দুটো সুন্দর সুন্দর ছোট গল্প। ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী এগুলোর মধ্যে সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা পায়। 

এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয় ১৮৭৮ সালে। এরপরে তিনি রচনা করেছিলেন ‘সন্ধ্যাসংগীত’ নামে আরেকটি কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বিখ্যাত কবিতা ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ এই কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ছিলো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিয়ে

ইংল্যান্ড থেকে দেশে আসার পর ১৮৮৩ সালে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিয়ে হয় বেনীমাধব রায়চৌধুরী নামক ঠাকুরবাড়ির এক অধস্তন কর্মচারীর মেয়ে ভবতারিণীর সাথে। বিয়ের সময় ভবতারিণীর পুনরায় পাল্টে রাখা হয় মৃণালিণী দেবী। 

মৃণালিনী দেবী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মোট পাঁচ সন্তান ছিল। তাঁদের নাম ছিল- মাধুরীলতা দেবী(১৮৮৬-১৯৮), রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর(১৮৮৮-১৯৬১), শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর(১৮৯৬-১৯০৭), মীরা দেবী(১৮৯৪-১৯৬৯) এবং রেণুকা দেবী(১৮৯১-১৯০৩)। দুর্ভাগ্যবশত এদের মধ্যে অতি অল্প বয়সেই রেণুকা দেবী ও শমীন্দ্রনাথ ঠাকুর মারা যান। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মধ্য জীবন

রবীন্দ্রনাথ ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে শান্তিনিকেতনে একটি আদর্শ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। দেশী – বিদেশী বহু জ্ঞানী – গুণী ব্যাক্তি এখানে শিখকতা করতেন। তা আজ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নামে খ্যাত। তারই রচিত দুইটি সঙ্গীত ‘জনগণমন ওধিনায়ক জয় হে’ এবং ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশ ও ভারতের জাতিয় সঙ্গীতরুপে গৃহীত ও সমাদৃত। 

রবীন্দ্রনাথ তাঁর জমিদারী পরিচালনার জন্য দীর্ঘসময় বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহে কাটিয়েছেন। তাঁর ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থসহ আরো অনেক ছোটগল্পের রচনার পটভূমি ছিল এই শিলাইদহ।  

আরো পড়ুন- অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন মূলত একজন কবি। মাত্র আট বছর বয়স থেকেই তিনি কাব্য রচনা শুরু করেন। তাঁর প্রকাশিত মৌলিক কাব্যগ্রন্থ হল ৫২ টি। তবে সঙ্গীতস্রষ্টা হিসেবেই তিনি বাঙালি সমাজে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় দুই হাজার গান লিখেছেন। গান ও কবিতা ছাড়াও তিনি ১৩ টি উপন্যাস, ৯৫টি ছোটগল্প, ৩৬ টি প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ এবং ৩৮ টি নাটক রচনা করেছেন। রবীন্দ্র রচনাবলী নামে ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনা প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রবর্তিত নৃত্যশৈল ‘রবীন্দ্রনৃত্য’ নামে পরিচিত। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেকগুলো কবিতা লিখে গেছেন। তার মধ্যে রয়েছে – 

১৮৯০ সালে প্রকাশিত মানসী

১৮৯৪ সালে প্রকাশিত সোনার তরী 

১৮৯৬ সালে প্রকাশিত চৈতালি 

১৮৯৬ সালে প্রকাশিত চিত্রা

১৯০০ সালে প্রকাশিত কল্পনা

২৯০০ সালে প্রকাশিত ক্ষণিকা

১৯১৮ সালে প্রকাশিত পলাতকা

এবং ১৯১০ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এই কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেছিলেন। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ছট গল্পকার। তাঁর কয়েকটি ছট গল্প হল- 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একাধিক ছোটগল্প নাটক, ছোটগল্প ও চলচ্চিত্র টেলিভিশনে অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। তাঁর গল্পের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি চলচিত্রায়ন হল সত্যজিৎ রায় পরিচালিত তিন কন্যা ও চারুলতা তপ্ন সিংহ পরিচালিত অতিথি, কাবুলিওয়ালা ও ক্ষুধিত পাষাণ, পূর্ণেন্দু পত্রী পরিচালিত স্ত্রীর পত্র ইত্যাদি।   

আরো পড়ুন- অপরিচিতা গল্পের mcq (বহুনির্বাচনী)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উপন্যাস রচনা করেন মোট তেরোটি। সেগুলো হল- 

বৌ-ঠাকুরাণীর হাট (১৮৮৩)

রাজর্ষি (১৮৮৭)

চোখের বালি (১৯০৩)

নৌকাডুবি (১৯০৬)

প্রজাপতির নির্বন্ধ (১৯০৮)

গোরা (১৯১০)

ঘরে বাইরে (১৯১৬)

চতুরঙ্গ (১৯১৬)

যোগাযোগ (১৯২৯)

শেষের কবিতা (১৯২৯)

দুই বোন (১৯৩৩)

মালঞ্চ (১৯৩৪) ও 

চার অধ্যায় (১৯৩৪)

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস রচনা প্রথম সুচনা হয় বৌ-ঠাকুরাণীর হাট ও রাজর্ষির মাধ্যমে। এই দুটি ছিল ঐতিহাসিক উপন্যাস। তাঁর বেশকিছু উপন্যাস অবলম্বনে কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সত্যজিৎ রায়ের ঘরে বাইরে ও ঋতুপর্ণ ঘোষের চোখের বালি ইত্যাদি।

রবীন্দ্রানাথ ঠাকুরের নাট্য সাহিত্য 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে নাট্যকার ও নাট্যাভিনেতা ছিলেন। মাত্র ষোল বছর বয়সে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক নাট্যমঞ্চে অগ্রজ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘হঠাৎ নবাব’ নাটকে ও পরে জ্যোতিরিন্দ্রনাথেরি ‘অলীকবাবু’ নাটকে নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর প্রথম গীতিনাট্য ‘বাল্মীকিরপ্রতিভা’ মঞ্চস্থ হয় ১৮৮১ সালে। এই নাটকে তিনি ঋষি বাল্মীকির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। 

আপনি চাইলে ভিড়িও দেখে নিতে পারেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুরষ্কার এবং অর্জনসমূহ 

  • ১৯৪০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শান্তিনিকেতনে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ স্মমানে ভূষিত করে ।
  • বিদেশে তাঁর রচিত সবথেকে জনপ্রিয় কাব্য হল ‘গীতাঞ্জলি’। এই কাব্যের জন্য ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। 
  • ১৯১৫ সালে তৎকালীন ব্রিটীশ সরকার কর্তৃক তিনি নাইট উপাধি পান। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানয়ালাবাগ হত্যাকেন্ডের ঘটোনা ঘটার পর তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন।
  • তিনি জাপানের ডটিংটন হল স্কুলের সহ প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
  • ভারতীয় ডাকবিভাগ সম্মান জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ৭ই মে ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি দেওয়া একটা ডাক টিকিট প্রকাশ করে। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু 

জীবনের শেষ কিছু বছর কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শরীরিকভাবে অসুস্থতার স্বীকার হন। রোগ যেন কিছুতেই ছারতেই চাইছিল না তাকে। দুইবার তিনি এমন অসুস্থতার স্বীকার হন যে তকে দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী অবস্থায় পরে থাকতে হয়েছে।  

জানা যায় কবি রবিন্দ্রনাথ ১৯৭৩ সালে একবার অচৈতন্য হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পড়েছিলেন। সেইবার সেবার মাধ্যমে সুস্থ উঠলেও পরবর্তীতে ১৯৪০ সালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন। অবশেষে ৮০ বছর বয়সে ৭ই আগস্ট ১৯৪১ ( ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ ) তারিখে কলকাতা জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

আরো পড়ুন- চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর FAQ

১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার পান ?

উত্তরঃ ১৯১৩ সালে 

২/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন ?

উত্তরঃ ৭ই মে ১৮৬১ সালে (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ)

৩/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ও মৃত্যু সাল কত?

উত্তরঃ ১৮৬১ – ১৯৪১ সাল

৩/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ও মৃত্যু সাল কত?

উত্তরঃ ১৮৬১ – ১৯৪১ সাল

৪/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতা কোনটি?

উত্তরঃ গীতাঞ্জলি

৫/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম কি ?

উত্তরঃ ভানুসিংহ

৬/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম কবিতা কোনটি ?

উত্তরঃ অভিলাষ 

৭/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কি ?

উত্তরঃ কবিকাহিনী

৮/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ডাক নাম কি ?

উত্তরঃ রবি

৯/ বাংলা কত তারিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন ?

উত্তরঃ ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দে

১০/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস কয়টি ? 

উত্তরঃ ১৩ টি 

১১/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান কত সালে ?

উত্তরঃ ১৯১৩ সালে

১২/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবার নাম কি ?

উত্তরঃ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ কবিতা কোনটি ?

উত্তরঃ তোমার সৃষ্টির পথ

১৪/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ উপন্যাস কোনটি ?

উত্তরঃ চার অধ্যায়

১৫/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান ?

উত্তরঃ ৫২ বছর

১৬/ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মায়ের নাম কি ?

উত্তরঃ সারদাসুন্দরী দেবী

4 thoughts on “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী – Rabindranath Tagore Biography in Bangla”

Leave a Comment