Hsc অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর Pdf সহ-2022

অপরিচিতা গদ্যের সৃজনশীল । অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর । অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল। অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর । অপরিচিতা গল্প ।

অপরিচিতা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

সৃজনশীল-০১

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

শিক্ষিত ছেলে রাফির পরিবার আর্থিকভাবে অনেক সচ্ছল। তার মা বাবা তার সাথে পরামর্শ না করেই ফারিয়ার সাথে বয়ে ঠিক করে। ফারিয়ার বাবার অনেক টাকা পয়সা ও অঢেল সম্পদের মালিক। ঘটকের মধ্যস্থতায় গোপনে বরপক্ষকে নগদ টাকা ও গাড়ী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যৌতুক এর কথা শুনে রাফি ও ফারিয়া বিয়েতে বেঁকে বসে এবং পরবর্তিতে সম্পূর্ণ যৌতুক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয়।

ক) অনুপমের বাবার পেশা কি ছিল?

খ) “এইতো আমি জায়গা পাইয়াছি।” – বলতে কি বোঝানো হয়েছে ব্যাখ্যা কর।

গ) উদ্দীপিকের রাফির সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের তুলনা ব্যাখ্যা কর।

ঘ) “উদ্দীপকে ‘অপরিচিতা’ গল্পে বর্ণিত সামাজিক অসঙ্গতি অনেকাংশেই প্রতিফলিত হয়েছে” – যাচাই কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক.জ্ঞান : অনুপমের বাবার পেশা ছিল ওকলাতি বা আইন ব্যাবস্যায়। 

খ. অনুধাবন: কল্যানীকে বিয়ে করতে না পারলেও তার কাছাকাছি থাকার আনন্দেকে বোঝাতে প্রশ্নোক্ত অনুভূতি প্রকাশ করেছে অনুপম।

সবকিছু ছেড়ে বছরের পর বছর অনুপম কানপুরে কল্যানীর কাছাকাছি থাকেন। কল্যানি তাকে ক্ষমা করে দিলেও বিয়েতে রাজি হয়নি। তারপরেও অনুপম তার দেখা পায়, কন্ঠ শুনে, সুবিধামত তার কাজ করে দিয়ে কল্যানীর কাছে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করে নেয়। সে অবস্থানের কথা বোঝাতে প্রশ্নোক্ত অনুভূতি প্রকাশ করেছে অনুপম।

গ) প্রয়োগ : উদ্দীপকের রাফির সাথে অনুপমের বিপরীত বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। 

উদ্দীপকের রাফি তার মা বাবার পছন্দেই বিয়ে করেন ফারিয়াকে। বিয়েতে জানতে পারে তার মা বাবা যৌতুক নিয়ে বিয়ে ঠিক করেছেন। এমন কথা শুনে বেঁকে বসেন তিনি। পরবর্তীতে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করেন তিনি। আর ‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপমের মামা যৌতুক নিচ্ছেন কল্যাণীর বাবার থেকে। শুধু যৌতুক নিয়েই শেষ নয়, গহনা পরখ করার জন্য স্যাকরা নিয়ে এসেছেন। এমন পরিস্থিতিতেও অনুপম কোনো প্রতিবাদ করেনি। সর্বোপরি তার মামার মতামতের বিরুদ্ধে সে কিছুই করতে পারেনি। 

উদ্দিপক এবং গল্পে দুইটি ক্ষত্রেই একি ঘটনা হলেও দুইজায়গায় দুইজনের আচরনে পার্থক্য রয়েছে। রাফি প্রতিবাদ করতে পারলেও অনুপম তা পারেনি। এখানেই দুইজনের বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যায়।

ঘ.উচ্চতর দক্ষতা: “উদ্দীপকে ‘অপরিচিতা’ গল্পে বর্ণিত সামাজিক অসঙ্গতি অনেকাংশেই প্রতিফলিত হয়েছে”- মন্তব্যটি যথাযথ হয়েছে।

উদ্দীপকে রাফির মা বাবা যৌতুক এর বিনিময়ে তার বিয়ে ঠিক করে ফারিয়ার সঙ্গে। যৌতুকের মধ্যে রয়েছে নগদ টাকা ও বাড়ি। এই ধরনের লভী মানুষের জন্যই সমাজে এখনো এইসব ঘৃণ্য কাজ টিকে আছে। অন্যদিকে ‘অপরিচিতা’ গল্পেও একি কাজ পরিলক্ষিত হয়। অনুপমের মামার যৌতুকের প্রতি লোভী মানসিকতার জন্য শেষ পর্যন্ত বিয়ে ভেঙে যায়। 

অনেক আগে থেকেই যৌতুক আমাদের দেশে বিদ্যমান। এই যৌতুকের অভিশাপে অনেক পরিবার এখনো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। উদ্দীপকের রাফির বাবা মা ও গল্পের অনুপমের মামা উভয়ই একি প্রকৃতির মানুষ। ‘অপরিচিতা’ গল্পে সামাজিক এই অসঙ্গতিই অনেকাংশেই প্রতিফলিত হয়েছে। এইদিক বিবেচনায় বলা যায় প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক। 

উদ্দীপকের রাফি মানবিক মূল্যবধসম্পন্ন ও ব্যক্তিত্ত্ববান মানুষ। আর অন্যদিকে গল্পের অনুপম ব্যাক্তিত্ববান নয় বরং দুর্বলচিত্তের মানুষ এবং অন্যের উপর নির্ভরশীল। ব্যাক্তিত্ববান না হয়ে অন্যের উপর নির্ভরশীল হওয়াতে বিয়ের সময় এমন আন্যায় কাজে তার মামাকে বাধা দিতে পারেনি। 

আরো পড়ুন- চিঠি লেখার নিয়ম বাংলা

সৃজনশীল-০২ 

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ 

আজ শ্বশুরবাড়ী যাবে নিহা। মা নেই তাই সবকিছু বাবাই দেখাশোনা করেন। দরিদ্র্য বাবা কবির মিয়া মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সামান্য জমিটুকু বন্ধক রেখে পনের টাকা যোগাড় করলেন। কিন্তু তাতেও সবগুল টাকা যোগাড় করতে পারেননি , সামান্য কিছু ঘাটতি র‍য়ে গেল। এদিকে বর সাহেদের বাবার এক কথা, সবগুল টাকা না পেলে তিনি তার ছেলেকে নিয়ে চলে যাবেন। এই বিষয়টি সাহেদ জানার পর তার বাবাকে সে সাফ জানিয়ে দে সে এখানে পণ্য কেনা বেচা করতে আসেনি। একজনকে জীবনসঙ্গী করতে এসেছে, ফিরলে নিহাকে সাথে নিয়েই ফিরবে। 

ক) সম্ভূনাথ সেন স্যাকরার হাতে কী পরখ করতে দিয়েছিলেন?

খ)  ‘বাংলাদেশের মধ্যে আমিই একমাত্র পুরুষ যাহাকে কন্যার বাপ বিবাহ আসর হইতে নিজে ফিরাইয়া দিয়াছে’ এই লাইন দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

গ) অনুপম ও সাহেদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বৈপরীত্য ব্যাখ্যা কর। 

ঘ) অনুপমের মামা ও সাহেদের বাবার মত মানুষদের জন্য আজও কল্যানী ও নিহাদের অপমানের শিকার হতে হয়- বিশ্লেষণ কর। 

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক. জ্ঞান : সম্ভূনাথ সেন স্যাকরার হাতে এয়ারিং পরখ করতে দিয়েছিলেন।

খ. অনুধাবন: লাইনটি দ্বারা যৌতুক এর জন্য অবমাননাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় কন্যার পিতা বিয়েতে অসম্মতি জানানোর মাধ্যমে অনুপমকে অপমান করার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।

অনুপমের মামা বিয়ে শুরুর পূর্বেই স্যাকরা দিয়ে কনেপক্ষ থেকে দেওয়া গহনাগুলো পরখ করতে চেয়েছেন। এমন অবমাননাকর পরিস্থিতিতে অনুপমের কোনো ভূমিকা না থাকায় কল্যানীর পিতা বিয়েতে অসম্মতি জানায়। বাবা হয়ে মেয়ের বিয়ে ভেঙে দেওয়া সাধারনত সমাজে লক্ষণীয় নয়। কল্যানীর বাবার এমন কাজ দেখে অনুপম প্রশ্নোক্ত বাক্যটি বলেছেন। 

গ.প্রয়োগ : ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপম ও উদ্দীপকের সাহেদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ বিপরীত।

‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের মামার যৌতুক ও গহনা পরখ করা নিয়ে এমন অবমাননাকর মুহূর্তেও অনুপম কোনো কিছু বলতে পারেনি। অন্যায়ের সামনেও চুপ করে ছিল। তার এমন আচরন দেখে কল্যাণীর বাবা বিয়েও ভেঙে দিয়েছেন। আর অন্যদিকে উদ্দীপকের সাহেদ অনুপমের সম্পূর্ণ বিপরীত। সে তার বাবাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সে পন্য কিনতে আসেনি, কাউকে জীবন সঙ্গী করে নিতে এসেছে, মূলত অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে নিজের উত্তম চরিত্র ও সাহসিকার প্রমান দিতে পেরেছে উদ্দীপকের সাহেদ।

গল্পের অনুপম ও উদ্দীপকের সাহেদ উভয়ের প্রেক্ষাপট এক হলেও অনুপম সেখানে চুপ ছিল এবং সাহেদ অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, এই দিক থেকে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বৈপরীত্য ফুটে উঠেছে।

ঘ.উচ্চতর দক্ষতা: ‘’অনুপমের মামা ও সাহেদের বাবার মত মানুষদের জন্য আজও কল্যানী ও নিহাদের অপমানের শিকার হতে হয়।’’ মন্ত্যব্যটি যথার্থ।

বিয়েতে যৌতুক দেওয়া নেওয়া দুটিই বড় অপরাধ। কিছু মানুষতো এতোটাই অমানবিক যে বিয়ে পর্যন্ত ভেঙে দিতে পারে যৌতুক না পেলে। এদের কারনে সমাজে নানা অশান্তির সৃষ্টি হয়। একের পর এক কুসংস্কার তৈরী হয়, এই মানুষগুলো সত্যিই অমানবিক। 

‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের মামা কল্যানীর বাবার কাছে যৌতুক দাবী করলে তার বাবা তাতে রাজি হন। বিয়ের দিন কন্যার শরীর থেকে গহনাগুলো খুলে নিয়ে আসতে বলেন তিনি তা স্যাকরা দিয়ে যাচাই করবেন। মামার এমন কাজে তার হীন মন মানসীকতা, অমানবিকা ও লোভ এর প্রকাশ পায়। উদ্দিপকের সাহেদের বাবাও অনুপমের মামার মত লোভী। কনের বাবা চাহিদা মাফিক যৌতুক দিতে না পারায় বিয়ের আসর থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দেন। 

গল্পের অনুপমের মামা ও উদ্দীপকের সাহেদের বাবা দুজনেরই মন মানসিকতা একই রকমের। দুজনই লোভী, অমানবিক ও হীন মন মানসীকতার তাই প্রশ্নোক্ত বাক্যটি যথার্থ।

আরো পড়ুন- কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী

সৃজনশীল-০৩

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

বিয়ের সময় যৌতুকের বিষয়কে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি করে এক পর্যায়ে রবিনের মামা বিয়ে ভেঙে দেন। অনিচ্ছা সত্বেও রবিন মামার কথা মেনে নিয়ে বিয়ের আসর থেকে ফিরে যায়। কিন্তু তার চোখে ভেসে ওঠে মহুয়ার বিবর্ণ মুখ ও তার বাবার অশ্রুভেজা চোখ। 

ক) কে অনুপমের আসল অভিবাবক?

খ) “এসব কথায় আমার সম্পূর্ণ অধিকার” – কোন প্রসঙ্গে এবং কেন বলা হয়েছে?

গ) উদ্দীপকের সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের বৈসাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা কর।

ঘ) ‘যৌতুক প্রথা বিবাহ সম্বন্ধে বিপর্যয় ডেকে আনে’- উদ্দিপক ও ‘অপরিচিতা’ গল্পের আলোকে তোমার মতামত দাও। 

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক.জ্ঞান : অনুপমের আসল অভিবাবক হল তার মামা।

খ. অনুধাবন: অনুপমের মামার গহনা যাচাই প্রসঙ্গে কল্যাণীর বাবা অনুপমের মতামত জানতে চাইলে অনুপম কথাটি বলে।  

অনুপমের যৌতুক লোভী মামা গহনা যাচাই করার জন্য বিয়েতে স্যাকরা নিয়ে আসলে এই নিয়ে অনুপমের মতামত জানতে চান সম্ভূনাথ সেন। মামার ওপরে কথা বলার সাহস অনুপমের নেই, তার ব্যক্তিত্বের দৃঢ়তার অভাবে মামার বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেনা। তার মামার এমন আচরনেও চুপ থাকে এবং বলে এই ব্যাপারে তার বলার অধিকার নেই। 

গ) প্রয়োগ : উদ্দীপকের রবিনের বিয়ে ভাঙ্গার ঘটনাটি প্রেক্ষাপটগত দিক থেকে ‘অপরিচিতা’ গল্পের সাথে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

‘অপরিচিতা’ গল্পে যৌতুক প্রথার বিরোধীতা করার চিত্র বিদ্যামান। অনুপমের মামা যৌতুকের গহনা যাচাই করার জন্য স্যাকরা নিয়ে আসে। এমন অমানবিক কাজে সম্ভূনাথ সেন অপমানবোধ করেন এবং এক পর্যায়ে গিয়ে বিয়ে ভেঙে দেন। 

উদ্দিপকের দেখা যায় যৌতুকের কারনে মহুয়া ও রবিনের বিয়ে ভেঙে যায়। দেনা-পাওনার হিসেবকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে বর রবিনের মামা বিয়ে ভেঙে দেন। উদ্দিপকে বরের মামা বিয়ে ভেঙে দিলেও ‘অপরিচিতা’ গল্পে এমনটা ঘটেনি। গল্পে যৌতুকের বিষয়কে কেন্দ্র করে অমানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কন্যার পিতা সম্ভূনাথ সেন নিজেই বিয়ে ভেঙে দেন। উদ্দীপকে যৌতুকের বিরুদ্ধে এমন ব্যক্তিত্ববান চরিত্র ফুটে উঠেনি, ফুটে উঠেছে কনে পক্ষের বিপর্যস্ততার চিত্র। এই দিকগুলো বিবেচনায় উভয় ক্ষেত্রেই বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

ঘ.উচ্চতর দক্ষতা: উদ্দপক ও ‘অপরিচিতা’ গল্পে উভয় ক্ষেত্রেই যৌতুকের কারনে বিয়ে ভেঙে যায়। তাই বলা যায় – যৌতুক প্রথা বিবাহ সম্বন্ধে বিপর্যয় ডেকে আনে। 

‘অপরিচিতা’ গল্পে যৌতুক নিয়ে অমানবিক কার্যকলাপ ফুটে উঠে। পুরো গল্পটি সাজানো হয়েছে সমাজের যৌতুক প্রথাকে কেন্দ্র করে। এখানে বরের মামার অমানবিক ও নিচু মন মানসিকতা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বিয়ের আগেই যৌতুকের গহনাগুলো যাচাই করতে চেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কন্যার বাবা নিরব প্রতিবাদ করে গেছেন এবং বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। 

উদ্দীপকে দেখা যায় রবিন ও মহুয়ার বিয়েতে যৌতুক নিয়ে প্রচুর তর্কবিতর্ক শুরু হয়। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে বর রবিনের মামা বিয়ে ভেঙে দেন। রবিনের বিয়ে করার ইচ্ছে থাকা সত্তেও তার মামার মুখের উপর কিছু বলতে পারেনি। এমনকি কন্যা ও তার বাবার এমন বিবৎস্য পরিস্থিতি দেখেও সে চাচার সিদ্ধান্তের বাহহিরে যেতে পারেনি।

উদ্দীপক এবং গল্পে উভয় জায়গায় যৌতুকের নির্মম চিত্র ফুটে উঠেছে। উভয় ক্ষত্রেই যৌতুককে কেন্দ্র করে বিয়ে ভেঙে যায়। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার দিকটি ভিন্ন হলেও ঘটনা একই ছিল। সুতরাং উপরিউক্ত আলচোনা থেকে বলাই যায় যৌতুক প্রথা বিবাহ সম্বন্ধে বিপর্যয়ই ডেকে আনে।

আরো পড়ুন- পদ্মা সেতু অনুচ্ছেদ

সৃজনশীল-০৪

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ

আমি আকাশে পাতিয়া কান

শুনেছি শুনেছি তোমারি গান 

আমি তোমারে সঁপেছি প্রান

অগ বিদেশিনী

ক) বিনুদাদা কে ?

খ) ‘প্রমান হইয়া গেছে, আমি কেহই নই’ কথাটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখ।

গ) উদ্দীপকের সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের কার মনের ভাবের মিল পাওয়া যায় ব্যাখ্যা কর।

ঘ) উদ্দীপকটিতে ‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপস্থিত যেকোনো একটি দিক নিয়ে আলোচনা কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

ক.জ্ঞান : বিনুদাদা হলো অনুপমের পিসতুতো ভাই। 

খ. অনুধাবন: অনুপম নিজের অপারগতা বোঝাতে গিয়ে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছিল। 

বিয়ের দিন অনুপমের মামার গহনা যাচাই করার মত নিচু মানসিকতার কাজ দেখে শম্ভূনাথ সেন অপমাবোধ করেন। তিনি মনে করেন মেয়েকে নকল গহনা দিয়ে বিয়ে দিবে এমন কথা যারা ভাবতে পারে তাদের কাছে বিয়ে দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। তাই তিনি কৌশলে পাত্রপক্ষকে খাওয়া দাওয়া করে চলে যেতে বলেন। আর এই বিষয়ে পাত্র অনুপমকে জিজ্ঞেস করারও কোনো প্রয়োজনবধ মনে করেননি, কারন তার এখানে বলার কিছু নেই যে তা তিনি আগেই বুঝে গেছেন। তাই মামার কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই বলে সে নিজের অপারগতা বোঝাতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।

গ) প্রয়োগ: উদ্দীপকের সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের মনের ভাবের মিল পাওয়া যায়। 

উদ্দীপকের কবি এক বিদেশিনীকে প্রান সঁপেছেন। তিনি কান পেতে বিদেশিনীর গান শুনে তার প্রেমে মেজেছেন। এই ভাবের সাথে ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমের ভাবের মিল রয়েছে। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর একদিন কল্যাণীর সাথে দেখা হলে অনুপম তাকে ভালবাসতে শুরু করে। তার কাছে থাকতে চায়, তাকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু কল্যানী তাতে আর রাজী হয় না। তারপরও অনুপম ফিরে আসেনা বরং কল্যাণীর ব্রতের সাথী হয়ে দূর থেকে ভালোবাসার সিদ্ধান্ত নেয়। 

উদ্দীপকের কবি অচেনা এক বিদেশিনীকে ভালোবেসে মনপ্রান সঁপে দিয়েচেন। ‘অপরিচিতা’ গল্পের অনুপমও দূর থেকে কল্যাণীকে মনেপ্রানে ভালোবাসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই দিক দিয়ে উদ্দীপকের কবি ও গল্পের অনুপমের মনের ভাবগত মিল পাওয়া যায়।

ঘ.উচ্চতর দক্ষতা: উদ্দীপকটিতে ‘অপরিচতা’ গল্পের যৌতুক ও তার প্রতিকারের দিকটি অনুপস্থিত।

আমাদের সমাজে যৌতুক একটি ভয়াবহ সমস্যা। যৌতুকের কারনে অনেক ক্ষেত্রে কন্যার পিতারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। যৌতুকের কারনে আমাদের সমাজে নারীরা অনেক জায়গায় অবহেলিত, লাঞ্চিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বিয়েও ভেঙে যাচ্ছে। ‘অপরিচিতা’ গল্পেও এমনটাই ঘটেছে। বিয়ে হওয়ার আগেই বিয়ে ভেঙে গেছে। 

‘অপরিচিতা’ গল্পে অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল যৌতুকের বিনিময়ে। কিন্তু বর অনুপমের মামা অতী লোভী হওয়ায় যৌতুকের গহনা যাচাই করার জন্য স্যাকরা নিয়ে যান বিয়ে বাড়িতে। এতে কন্যা কল্যাণীর বাবা অপমানবোধ করেন এবং বিয়ে ভেঙে দেন। কিন্তু উদ্দীপকে এইসবের কোনকিছুর প্রতিই আলোকপাত করা হয়নি। কল্যাণীর প্রতি অনুপমের দুর্বলতা বা ভালোবাসার দিকটিই ফুটে উঠেছে। 

উদ্দীপক এবং ‘অপরিচিতা’ গল্পে শুধুমাত্র ভালোবেসে যাওয়ার দিকটিই ফুটে উঠেছে। ‘অপরিচিতা’ গল্পের পরিসর এর থেকেও বিস্তৃত। সেখানে যৌতুক ও বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনাগুলো উদ্দীপকে উঠে আসেনি। 

আরো পড়ুন- Padma Bridge Paragraph

আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখুন- learn-zone

অপরিচিতা Pdf

অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment